সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে আরো অনেক উঁচুতে

যাদবপুর, কলকাতা ৭৫


একটি স্থির জানলায় বসে দেখলাম, চলতে চলতে ক্রমশ নরম হয়ে, আলো হারিয়ে গেল অন্ধকারের কবলে। দূরে কোথাও বেজে যাচ্ছে প্রার্থনা সঙ্গীত। আরো দূরে ঝকমক করছে পাহাড়ের গায়ে জ্বলে ওঠা হিরে কুচি। আমি আর কেন দেখতে পাচ্ছি না, পাহাড়ের গায়ে জমে থাকা মেঘ, সমতলে ঝরে পড়া ভোরের বৃষ্টি? কোথাও কি শূন্য হয়ে গেল কিছু? একটা নিস্তব্ধ রেলওয়ে স্টেশনে বসে, আমার হাতের টিকিটের আড়ালে যে দিকনির্দেশ, সেখানে আমি, যেতে চাইনি কখনোই, তোমাকে ছেড়ে। অথচ ঘরের কোণে রাখা সেই মারফি রেডিওটা, একবারও আটকাল না আমায়। যে রেডিওটার পাশে বসে আমি শুনতাম কারপেন্টার্স আর বড়ে গুলাম আলি খাঁ, যার নিচে রাখা থাকত আমার জমানো কাচের গুলির বাক্স আর রাশিয়ান সার্কাসের ছেঁড়া টিকিট, সেই শৈশব চিহ্নগুলো, এই একটা বন্দি রবিবারের বিকেল খানিক আগেই হারিয়ে গেল সমস্ত জীবন থেকে। আর আমি ছায়া হয়ে খুঁজে বেড়াতে লাগলাম তোমার স্থানাঙ্ক। অক্ষরেখা ও দ্রাঘিমা রেখার কাটাকুটি খেলায় আমি অন্ধের মতো হাতড়ে বেড়াতে লাগলাম একটি সম্ভাবনাময় দোলনা, বেতের, যেটায় তুমি রাধার মতো দুলবে, আর আমি বাঁশি বাজাব আদর ছুঁয়ে।

বৈশাখী ২০২৪