বোঝাপড়া

"নাহ, শীতটা ঠিক জ'মছে না। চলো কোথাও ঘুরে আসি।" ব্রেকফাস্ট খেতে খেতে ইরার উদ্দেশ্যে শুভঙ্কর ছুঁড়ে দিল কথাটা। ইরা যেন শুনতে পেয়েও পেল না। চুপচাপ নিজের খাবার খেতে লাগল । 
"ডাক্তারবাবুকে একটা ফোন করবো?" শুভঙ্কর জিজ্ঞাসা ক'রল। 
"না।"
"কেন? তুমি তো এখন ভালো আছো।"
"ভালো আছো ব'লতে তুমি কী বোঝো? "

শুভঙ্কর আর কথা বাড়াল না। 

দিনটা রবিবার ছিল। ব্রেকফাস্ট সেরে বেরিয়ে পড়ল হাতে বাজারের ব্যাগ নিয়ে। চায়ের দোকানে একটু আড্ডা মেরে ফিরবে। 

বাজারে গিয়ে খাসির মাংসটা আগেই কিনল। রবিবার খুব ভিড় হয়। আরও টুকটাক আনাজপাতি, একটু জায়ফল আর জয়ত্রী কিনে, চায়ের দোকানে একটু চা খেয়ে সোজা বাড়ি ফিরে এল। আজ নিজেই সব রান্না করবে। আড্ডায় আজ আর বসল না।

বাড়ি ফিরে শুভঙ্কর দেখলো ইরা চাল ধুচ্ছে ভাত বসাবে বলে।
"কী ব্যাপার, তুমি চাল ধুচ্ছো। অজন্তা আজ আসেনি? আজও ছুটি নিয়েছে?"
"ও বলেই ছুটি নিয়েছে।"
"আমায় বললে না কেন? ও আজকাল খুব ঘন ঘন ছুটি নিচ্ছে।"
"ওর বরের শরীর খুব খারাপ, বাঙুর হাসপাতালের এমার্জেন্সিতে নিয়ে যাবে । মনে হয়  ....."
"কী?"
"পেটে জল জমেছে। খুব কষ্ট পাচ্ছে।"

শুভঙ্করের মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল। মাংসটা ডিপ ফ্রিজে ঢুকিয়ে রাখল। চিন্তাভাবনা সব এলোমেলো হ'য়ে যাচ্ছে। 
ব্যাগটা রেখে দিল শুভঙ্কর। কাউকে কিছু না বলে আলমারি থেকে একটু বেশি ক'রে টাকা নিয়ে ছুটল বাঙ্গুর হাসপাতাল। 
ইরা জিজ্ঞাসা ক'রল, "কোথায় যাচ্ছো?"
শুভঙ্কর কোনো উত্তর দিল না।

বৈশাখী ২০২৪