আজ একটু অণু পরমাণু নিয়ে কথা বলা যাক। পরমাণু হল পদার্থের খুব ছোটো কণা। এরা আবার আরো ছোটো ছোটো কিছু কণা নিয়ে তৈরি। নিউট্রন এবং প্রোটন পরমাণুর একেবারে সেন্টারে থাকে। ঠিক একটি ফুটবল মাঠের একেবারে সেন্টারে যেমন বলটি রাখা হয়, ঠিক তেমনি। আর বলের চারপাশে ছুটতে থাকা player গুলো হল ইলেকট্রন! এছাড়াও আরো কণা আছে। যেমন মেসন। প্রোটন এবং নিউট্রন এই মেসন কণার আদানপ্রদান করে যথাক্রমে নিউট্রন এবং প্রোটনে পরিণত হয়। এদের এই আকর্ষণ বল নিউক্লীয় বল নামে পরিচিত। পজিট্রন নামে একটি কণা থাকে। এরা ইলেকট্রনের ঠিক উল্টো। সেইজন্য ইলেকট্রনকে আবার নেগেট্রনও বলা হয়। আরো দুটো কণার অস্তিত্ব কল্পনা করা হয়। নিউট্রিনো আর অ্যান্টি নিউট্রিনো। মাঝখানে LHC এর টানেলে সার্ন এর অধীনে একটি পরীক্ষায় প্রথমে মনে হচ্ছিল যে এই নিউট্রিনোর গতি আলোর থেকেও বেশি। তারপর Stephen Hawking নিজেই সেসব সম্ভাবনার কথা উড়িয়ে দিয়েছিলেন! বলাই বাহুল্য, সেটা হলে আজকের বিজ্ঞানের একটা আমূল পরিবর্তন করতে হত! এখন এই পরমাণুর চার্জ কিন্তু নেই। প্রোটন ও ইলেকট্রন সমান সংখ্যায় থাকার কারণে এদের চার্জ শূন্য হয়ে যায়। মনে রাখতে হবে প্রোটন সাইজে ইলেকট্রনের থেকে বেশ বড়। এখন ইলেকট্রন তো পরমাণুর ভিতর ওই সেন্টারটির অর্থাৎ নিউক্লিয়াসের চারপাশে বিভিন্ন অর্বিটে পাক খাচ্ছে। খেতে খেতে মাঝে মাঝে নিউক্লিয়াসের সামনে এসে পড়ছে। আর অমনি বিপরীত চার্জের জন্য প্রোটন আকর্ষণ অনুভব করছে। ঝাঁকে ঝাঁকে ইলেকট্রন বেরোচ্ছে আর তার টানে বেরোচ্ছে আস্তে আস্তে একটা প্রোটন। এইসময় কিন্তু ইলেকট্রন জোড়ায় জোড়ায় অগ্রসর হয় আর যেদিকে ছোটে তার উল্টো দিকে ইলেক্ট্রিসিটি তৈরি হয়। এই জোড়া ইলেকট্রনকে বলে "কুপার পেয়ার" বিজ্ঞানী লিওনি কুপার এর নামানুসারে। এই কুপার কিন্তু একা ছিলেন না। নোবেল পুরস্কার পেলেন তিনজনেই। জন বার্ডিন, শ্রাইফার আর কুপার। কঠিন পদার্থের পরমাণুগুলো খুব ক্লোজড থাকে। একে অপরকে জড়িয়ে ধরে থাকে। এজন্য আকর্ষণ বল খুব বেশি থাকে। তাই কঠিন পদার্থকে তাপ দিলে একেকটা পরমাণু chain wise গরম হতে থাকে। পদ্ধতির নাম? পরিবহন। পরমাণুগুলোকে না সরিয়েই পুরো পদার্থটি গরম হয়ে যায়। তরল পদার্থের পরমাণুগুলো একটু ছেড়ে ছেড়ে থাকে। এজন্য তাপ দিলে পরিচলন পদ্ধতিতে কণাগুলো একটু জায়গা চেঞ্জ করে এবং একটা আলোড়ন সৃষ্টি করে। এভাবে পুরো তলটি গরম হয়ে ওঠে। গ্যাসের গল্পটা অনেক বেশি ইন্টারেস্টিং। এদের কোনো মিডিয়াম লাগেনা। আসলে গ্যাসের কোনো নির্দিষ্ট আয়তন বলে কিছু হয় না! পুরো হ য ব র ল! একটা জারে গ্যাস আছে। আয়তন কিন্তু ঐ কনটেইনার এরই। কারণ, গ্যাসের kinetic theory অনুযায়ী, গ্যাসের পরমাণুগুলো যতই ছোটো হোক না কেন, তাদের কিছুটা হলেও একটা আয়তন আছে। কিন্তু সেটা negligible, অগ্রাহ্য। তাই, গ্যাস গরম হতে সময় লাগে না বললেই চলে! পদ্ধতির নাম? বিকিরণ। আর এই বিকীর্ণ তাপের বেগ আলোর বেগের সমান! এবার পরমাণুর কক্ষপথ নিয়ে কথা বলা যাক। পরমাণুর মোট সাতটি কক্ষপথের কথা কল্পনা করা হয়। K L M N O P Q. এখানে ইলেকট্রনগুলো থাকে। এগুলোতে থাকার সময় এমনিতে ইলেকট্রন শান্তই থাকে। কিন্তু বিপত্তি ঘটে যেই উপরে বা নীচে যাওয়ার ভূত এদের মাথায় চাপে! আমরা যেমন তিনতলায় উঠতে গেলে হাঁফিয়ে যাই, জোরে জোরে শ্বাস নিতে হয়, অর্থাৎ শক্তির প্রয়োজন হয় আমাদের; ওদেরও তেমনি উপরের কক্ষে উঠতে গেলে শক্তি শোষণ করতে হয়। এই শক্তি বিভিন্ন রকম হতে পারে। তাপ, তড়িৎ, তেজষ্ক্রিয়, আলোক, চৌম্বক বিভিন্ন শক্তি। আবার নীচে নামতে হলে শক্তি বর্জন করতে হয়। বিজ্ঞানী ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক এর কথা অনুযায়ী এই শক্তির পার্থক্য সবসময় ইলেকট্রনের কম্পাঙ্ক এবং প্ল্যাঙ্ক ধ্রুবকের গুণফলের সাথে সমান হয়। ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক এর তত্ত্ব অনুযায়ী ফোটন হল একধরনের কণা, যা আলোতে উপস্থিত। তিনি ফোটন কে বললেন এক একটা এনার্জি প্যাকেট। এই এনার্জি কে বললেন কোয়ান্টাম। আলো যখনই কোনো পরমাণুর উপর আপতিত হয়, তখনই সেখান থেকে ইলেকট্রন নিঃসৃত হয়। তো এরকম সহজ ব্যাখ্যার জন্যে চারপাশে আলোড়ন সৃষ্টি হল। এমনিতেই নিলস বোর বললেন যে ইলেকট্রন যখন স্টেশনারি অরবিট এর মধ্যে থাকবে, ততক্ষণ কাউকে শক্তি দেবেও না, আর কারো থেকে শক্তি নেবেও না। তারপরই ফোটনের এই শক্তির কথা বললেন প্ল্যাঙ্ক। আরো জানা গেল যে, এই ফোটনের নাকি ভর বলে কিছু নেই! অথচ মোমেন্টাম মানে ভরবেগ maximum! বোঝো! Highly Suspicious! দেখা গেল এরকম শুধু ফোটন নয়, এর আরেকটি বন্ধুও আছে। তার নাম গ্লুওন। এ তো মহা জ্বালা! পরবর্তীকালে এই কণাগুলিকে বোসন কণার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এরকম ছয়টি কণা থাকে বোসনের আওতায়। আর বাকি বারোখানিকে বলে ফার্মিয়ন। প্রথমটা সত্যেন্দ্রনাথ বসুর নামে, পরেরটা এনরিকো ফার্মির নামে। এই আঠারোটি কণা আর চারটে বল নিয়েই এই বিশ্বব্রহ্মাণ্ড! চারটে বল হল যথাক্রমে স্ট্রং ফোর্স, উইক ফোর্স, ইলে্ট্রোম্যাগনেটিক ফোর্স এবং গ্রাভিটি। আর কণাগুলির নাম পরের দিন বলব! তার সাথে বলব আঠারোটি কণার মধ্যে সেরা কণাটির কথাও... যার নাম "গড পার্টিকেল"... গড পার্টিকেল। মানে হল গিয়ে ঈশ্বর কণা। এর সাথে কিন্তু ঈশ্বরের কোনো সরাসরি যোগাযোগ নেই। প্রথমে এক বিজ্ঞানী এই কণার সন্ধান করতে করতে বিরক্ত হয়ে একদিন বলে ফেলেছিলেন, "গড ড্যাম পার্টিকেল, টু বি হেল উইথ ইউ! " তারপর এখান থেকেই এক সাংবাদিক ড্যাম শব্দটি বাদ দিয়ে "গড পার্টিকেল" স্টিকার লাগিয়ে দেন কণাটির গায়ে। ব্যাস! সেখান থেকেই লেজেন্ড! এখন এই কণাটির কাজ কী? এটি আলাদা কেন বাকি বোসন কণার থেকে? এই কণা বাকিদের mass অথবা ভর যোগান দেয়। সমস্ত লেপটন এবং কোয়ার্ক কণা ভর পায় এই গড পার্টিকেল এর কাছ থেকে। আর সেই সঙ্গে শক্তিও। graviton থেকে শুরু করে মেসন, সমস্ত কণা ফিডিং বোতলের জন্য এই কণাটির উপরেই নির্ভর করে থাকে। বাকি বোসন কণাগুলো যেমন, W+, W-, Z0 এই পার্টিকেল গুলোও একই আওতায় পড়ে। তো এহেন ঈশ্বর কণার অস্তিত্ব কল্পনা করা হলেও বাস্তবে এর সন্ধান এখনও পাওয়া যায়নি। অবশ্য চেষ্টার কোনো ত্রুটি নেই। কসমস থিওরি, বিগ ব্যাং থিওরি ইত্যাদি ব্রহ্মাণ্ড সৃষ্টির তত্ত্ব গুলো নিয়ে কাটাছেঁড়া চলছে যাতে গড পার্টিকেল এর উপরে আলোকপাত করা যায়। জেনিভাতে লম্বা সুড়ঙ্গ লার্জ হেড্রন কলাইডার এর মধ্যে প্রোটন স্রোত ছোটানো হচ্ছে। সবই হচ্ছে। কিন্তু কণা বাবাজীবন আর দেখাই দেন না! তবুও চেষ্টা অব্যাহত। গড পার্টিকেল বলে কথা! গড কি আর এত সহজে ধরা দেয়? ! তাই অধরাই আছে এখনও! এসবের মধ্যেই সিংগুলারিটি নিয়ে রজার্স পেনরোজ আর স্টিফেন হকিংয়ের গবেষণাও সাড়া ফেলল নতুন করে। স্পেস আর টাইমের ব্যাপারটা মাথাচাড়া দিয়ে উঠল গড পার্টিকেল এর পাশাপাশি! কল্প বিজ্ঞানের কাহিনি নয়, সত্যি সত্যি সমান্তরাল মহাবিশ্ব বা প্যারালাল ইউনিভার্সের আভাস পেয়েছেন বলে দাবি করে বসলেন নাসা বিজ্ঞানীরা। পদার্থবিজ্ঞানের প্রচলিত নিয়মকানুন উল্টো চলে সেখানে, অন্তত সেটা-ই বলছেন তারা। নিউ ইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদন বলছে, অ্যান্টার্কটিকায় এক গবেষণা চালানোর সময় ওই প্রমাণ উপাদান নজরে আসে নাসা বিজ্ঞানীদের। নাসার ‘অ্যান্টার্টিক ইমপালসিভ ট্রানজিয়েন্ট অ্যান্টেনা’ (আনিটা) হলো এক ধরনের তরঙ্গ শনাক্তকরণ যন্ত্র যা বেলুনে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে দক্ষিণ মেরুর বাতাসে। অ্যান্টার্কটিকার জলবায়ু শুষ্ক এবং ঠাণ্ডা হওয়ায় সেখানকার বাতাসে মহাজাগতিক রশ্মি প্রায় অবিকৃতভাবে শনাক্ত করতে পারে এই অ্যান্টেনা। আনিটা ২০০৬ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যবর্তী সময়ে ঝর্ণার মতো বেরিয়ে আসা উচ্চ শক্তিসম্পন্ন কণার খোঁজ পেয়েছিল। কিন্তু বরফ থেকে নিঃসরিত ওই কণাকে সে সময় প্যারালাল মহাবিশ্বের প্রমাণ হিসেবে মেনে নেননি গবেষকরা। স্রেফ ‘ব্যাকগ্রাউন্ড নয়েজ’-এর তকমা দিয়ে বিষয়টিকে বাতিল করে দেন তারা। পরে ২০১৬ সালের এক গবেষণায় উঠে আসে ভিন্ন তথ্য। গবেষকরা দেখেন ওই কণার সঙ্গে ‘উল্টো মহাজাগতিক রশ্মি’র মিল রয়েছে। বিশেষজ্ঞরা এখন বিশ্বাস করছেন, ওই কণাগুলো আদতে সময়ের উল্টোদিকে ধাবিত হচ্ছে। আর সেটি সম্ভব যদি কাছাকাছিই একটি সমান্তরাল মহাবিশ্ব বা প্যারালাল ইউনিভার্স থেকে থাকে। এবং ওই মহাবিশ্বে পদার্থবিজ্ঞানের প্রচলিত নিয়ম চলে 'উল্টো পথে'। “প্রথমে মহাজাগতিক রশ্মির মতো কিছু একটা আমাদের মনে হয়েছিল যেটি বরফের আস্তরে প্রতিফলিত হচ্ছে। কিন্তু এটি কোনো প্রতিফলন ছিল না। বরফের ভেতর থেকে বের হয়ে আসছিল ওই মহাজাগতিক রশ্মি” - বলেছেন ইউনিভার্সিটি অফ হাওয়াই-এর পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক পিটার গরহ্যাম। গবেষকদের দলনেতা অধ্যাপক গরহ্যাম আরও বলেছেন, “খুবই অদ্ভুত একটি ব্যাপার। তাই আমরা বিষয়টি নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছি। সেখানে আমরা জানিয়েছি, পদার্থবিজ্ঞানের আদর্শ মডেলের সঙ্গে যথেষ্ট টানাপোড়েন রয়েছে এর।” “অনেকেই ওই অনুমানের ব্যাপারে স্বস্তি বোধ করেননি” - স্বীকার করেছেন গরহ্যাম। গবেষণা বলছে, ওই তরঙ্গ উপরের দিকে ধাবমান কোনো কণা থেকে এসেছে যা বরফ থেকে নিঃসরিত হওয়ার আগে পৃথিবী ভেদ করে এসেছে। অথচ মহাজাগতিক রশ্মির বেলায় এতো বড় মাপে এমনটি ঘটার নজির নেই। একটি সম্ভাব্য কারণ হতে পারে, কোনো উজ্জ্বল সুপারনোভার বিস্ফোরণে এই মহাজাগতিক রশ্মি পৃথিবী পর্যন্ত চলে এসেছে। সে যাই হোক, ফিরে আসি বেসিসে! বোসন কণার সাথে ফার্মিয়ন এর প্রধান পার্থক্য হল স্পিন। যেমন ইলেকট্রন স্পিন করে। এর স্পিন হল 1/2h। এই স্পিন হল নিজের অক্ষের চারপাশে ঘূর্ণন। ইলেকট্রন কিন্তু ফার্মিয়ন। এদের স্পিন সর্বদা পূর্ণ সংখ্যার অর্ধেক হয়। আর বোসন কণার স্পিন পূর্ণসংখ্যা হয়। যেমন:ফোটনের স্পিন 1h এই h হল প্ল্যাঙ্ক এর ধ্রুবক। দ্বিতীয় পার্থক্য হল কনজারভেশন ল অফ মোমেন্টাম জনিত। দুটো কণার সংঘর্ষের আগে মোট চার্জ যা ছিল, সংঘর্ষের পর মোট চার্জ একই থাকবে। তাদের ভরবেগের কোনো পরিবর্তন হবে না। ফার্মিয়ন কণা এগুলো মেনে চললেও বোসন কণাগুলো সব কনজারভেশন ল গুলো কিন্তু মানে না! যেমন, Isospin, strangeness ধর্মগুলো বোসন কণাগুলো কখনোই মানে না। কিন্তু ফার্মিয়ন গুলোর নামকরণের মধ্যেই ধর্মগুলো স্পষ্ট। - টপ ও বটম কোয়ার্ক - আপ ও ডাউন কোয়ার্ক - চার্ম ও স্ট্রেঞ্জ কোয়ার্ক এসব কণার মতই বিপরীত কণা আছে, যাদের বলে অ্যান্টি কোয়ার্ক। একটি কোয়ার্ক আর অ্যান্টি কোয়ার্ক মিলে হয় মেসন। সার্ন এ এখন ANTIPARTICLE নিয়ে গবেষণা চলছে। এর সাথেই এসেছে ম্যাটার এবং অ্যান্টি ম্যাটার এর তত্ত্ব। কণা জুড়ে যেমন ম্যাটার হয়, তেমনই অ্যান্টি পার্টিকেল জুড়ে অ্যান্টি ম্যাটার হয়। পরমাণুর গঠন নিয়ে আলোচনা করলে এর ইলেকট্রনগুলোর কক্ষপথের কথা আসবে না, সেটা কখনো হয়? প্রথমে বলা হয়, কক্ষপথ গোল। পরে বলা হল, ডিমের মতন। উপবৃত্তাকার। যদিও এগুলো সবই কাল্পনিক। কক্ষপথে আটটা ইলেকট্রন সর্বোচ্চ ঘুরতে পারে। তার বেশি না। এই ইলেকট্রন গুলি কক্ষপথে যখন ঘুর্ণনরত অবস্থায় থাকে, তখন এর স্পীড আর পজিশন একসাথে ঠিকঠাক ক্যালকুলেট করা প্রায় অসম্ভব। তো এ প্রসঙ্গে একটা মজার গল্প বলা যাক। জার্মানির মিউনিখে বিজ্ঞান সম্মেলন চলছে। বিজ্ঞানী ওয়ার্নার হাইসেনবারগ বললেন, "It's almost impossible to determine the exact position and the momentum of a moving microscopic subatomic particle at once"। আইনস্টাইন এসব শুনে বাইরে বেরিয়ে বড় রাস্তা ধরে হাঁটতে শুরু করলেন। সামনে দোতলা বাস আসছে জোর গতিতে। উনি দাঁড়িয়ে গেলেন। আর হাইসেনবার্গ পিছন থেকে হ্যাঁচকা টানে তাকে সরিয়ে নিলেন! "তুমি পাগল নাকি! ওভাবে দাঁড়িয়ে গেলে চলন্ত বাসের সামনে? " আইনস্টাইন নির্বিকার! "কেন? তুমিই তো বললে, কোনো চলন্ত জিনিসকে আমরা যদি দেখতে পাই, তাহলে তার স্পীড টের পাব না! " হাইসেনবারগ রেগে গেলেন! তারপর ঠান্ডা মাথায় বোঝালেন যে ওটা আণুবীক্ষণিক কণার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য! সেই থেকে প্রবর্তিত হল বিখ্যাত "Uncertainty Principle of Heisenberg" এটা থেকে কক্ষ ও কক্ষক নিয়ে গবেষণা শুরু হল। এবং শীঘ্রই শ্রডিনজার নামের এক scientist wave function equation এর মাধ্যমে পরমাণুর একটি 3D স্পেসের সন্ধান দিলেন, যেখানে ইলেকট্রনকে পাওয়ার সম্ভাবনা সর্বাধিক। বিজ্ঞানী ডি ব্রগলি সর্ব প্রথম পদার্থের দুটো অস্তিত্বের কথা বলেন। তিনিই প্রথম বলেন যে পদার্থের ডুয়াল এনটিটি বা দ্বৈত সত্ত্বা বর্তমান। অর্থাৎ সাদা চোখে যেগুলো দেখি সেগুলো না হলেও subatomic particle গুলোর মধ্যে যেমন ফোটন, প্রোটন, ইলেকট্রন, মেসন, পজিট্রন প্রভৃতির কণা ধর্ম এবং তরঙ্গ ধর্ম দুটোই বর্তমান। অর্থাৎ কোনো কণাকে মাইক্রোস্কোপ দিয়ে দেখা গেলে তার তরঙ্গ রূপকে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব নয়। এবং উল্টোটা ঘটে যখন visible light কোনো ধাতব পৃষ্ঠে আপতিত হয়। আর এখান থেকেই আবার প্রমাণ করা যায় Einstein এর photoelectric effect এর সমীকরণ। নিয়ম হল কোনো ধাতব তলে যখন সূর্যের আলো অর্থাৎ ফোটন আপতিত হয়, তখন প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই সেখান থেকে ইলেকট্রন নির্গত হয়। আর এটাই ইলেকট্রন এমিশন নামে পরিচিত। বলা হয় একটি নির্দিষ্ট কম্পাঙ্কের আলো না পড়লে ঘটনাটি সম্ভব নয়। এই কম্পাঙ্ক বা frequency কে Threshold frequency বলে। আবার যে minimum work done এর জন্য ধাতব তল থেকে ইলেকট্রন নির্গত হয়, তাকে ওই ধাতুটির work function বলে। ব্যাপারগুলো দারুণ মজার। প্ল্যাঙ্ক এর কোয়ান্টাম তত্ত্ব এবং আইনস্টাইনের থিওরি অফ রিলেটিভিটি দুটোকেই কাজে লাগিয়ে ডি ব্রগলি কণার তরঙ্গ দৈর্ঘ্য নির্ণয়ের সমীকরণ দেন। E=mc2 এবং E= hν (এইচ নিউ) এই দুটো থেকে সমীকরণ দুটো সমান করে সহজেই তরঙ্গদৈর্ঘ্য বা lamda এর ভ্যালু নির্ণয় করা যায়। Lamda=h/mc or lamda=h/p যেখানে p হলো কণা রূপ তরঙ্গের মোমেন্টাম বা ভরবেগ। এপ্রসঙ্গে বলে রাখি, ভুললে চলবে না ফোটনের মাস মানে ভর শূন্য! কাজেই মিনিমাম মাস বা ভর না থাকা সত্ত্বেও এর ভরবেগ সবথেকে বেশী! এজন্যেই তো বলে, কোয়ান্টাম মেকানিক্স যে বুঝে গিয়েছে সে হয় জিনিয়াস নাহলে উন্মাদ!