অন্যগদ্য ভূমিকা

বোড়াল, কলকাতা ১৫৪


কথাটা উঠেছিল উই-কাটা ফুসফুস আর আমাদের হৃদয়ের বিমর্ষতা নিয়ে, সকাল হলে পাখিরা রোদ-বাতাসে সিক্ত হয়ে যখন নীল অবাধের দিকে উড়ে যায়, আমার ব্যক্তিগত হৃদয় ক্রমশ সংকুচিত, পাপের বিষাক্ত ঢেকুরে ধরে আসা গলা; সুখের দৃশ্যগুলি, যেমন কমলারঙের শিশির রোদ এসময় তাদের ফেসিয়াল সেরে নেয়, টি.বি. স্যানিটোরিয়ামের জানলায় সারি সারি দেখা যায়, কৌতূহলী আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকা কতগুলো অভুক্ত ঘোলাটে চোখের মিছিল, এই আজ-দুনিয়ার ব্যস্ত মুখটির দিকে ওদের ফ্যালফ্যাল চাহনি, যেন ওরা এই পৃথিবীর কেউ নয়, পৌঁছে গেছে অন্য কোন পৃথিবীতে, যেখানকার ভাষা এখনও শিখে উঠতে পারেনি আর এদিকে মানুষের ভাষা ও পাখিদের ভাষা একে একে বিলুপ্তির পথে। ত্রিশঙ্কু এই দশা, যা জানলা পেরিয়ে একটা অপরিতৃপ্ত প্রেতাত্মার মত ঘুরে বেড়ায়, যেন সব সময় একটা ধোঁয়ার গন্ধ, যেখানে মানুষের ঝলসানো মাংস এবং তার নাভিকুণ্ড পর্যন্ত একটা উদ্যোগপূর্ণ অপেক্ষা; ওরা সেই মানুষটির অবশিষ্টটুকু মাটির শান্তি মোড়কে মুড়ে নিয়ে যাবে, ভাসিয়ে দেবে কোন আবহমান ধারায়। এইভাবে আমাদের 'দুর্গা-অপুর পিসি'র সন্ধের দাওয়ায় বসে চরম সুখের দিকে তাকিয়ে থাকা।

বৈশাখী ২০২৪