পাড়া

মেছেদা, পূর্ব মেদিনীপুর


রাত্রির প্রথম প্রহর। অক্ষরেরা নৌকো বেয়ে নদীর ঘাটে জড়ো হয়েছে। আমি ওদের নিয়ে বাড়ি ফিরে খাতায় অক্ষরযোজনা প্রকল্পে হাত দিয়েছি। পাড়াটি এসে জানালায় মুখ দেখাল। আজ পরনে তার শান্তিপুরি তাঁতের শাড়ি। বলল, '”চলো পাড়া বেড়িয়ে আসি সই!” বেজার মুখে পাড়ার সাথে প্রভু জগন্নাথদেবের মন্দিরে যাই। বাড়ির সামনে মন্দির বলেই যাবার সময় হয় না। নামহট্ট মন্দিরে প্রণাম সেরে মাঠের কোনায় পদ্মদিঘিতে যাই। পাড়া নাইতে গেল, পদ্ম-শালুকের সাথে জলকেলি সেরে উঠে পড়ল। 

পাড়ার পাগলি আর বাপ-মা মরা কুচকুচে কালো কুকুরটি আমাদের সাথে ঘুরতে লাগল। মাঠে আমরা চারজন চু-কিত -কিত খেললাম। মন্দিরের কালোজাম গাছ থেকে জাম পেড়ে খেলাম। গাছের ঘুমন্ত পাখিগুলো আমাদের বকাবকি করল। হঠাৎ করে বৃষ্টি এল, ধেয়ে এল কাঁঠালি চাঁপার সুগন্ধ। আমি বাড়ি ফিরলাম, পাড়া, কুকুর, পাগলি মন্দির চত্বরে ঘুমিয়ে পড়ল। বৃষ্টিতে কদমকুঁড়িদের মিষ্টি হাসি শুনতে পেলাম। কদমগাছে বসে পা দোলাচ্ছেন স্বয়ং কানহা, মাথায় ময়ূরপুচ্ছ, বাঁশি বাজাচ্ছেন আর মৃদু মৃদু হাসছেন........

বৈশাখী ২০২৪