একটি সনির্বন্ধ কথোপকথন

সোদপুর, কলকাতা ১১০

লেখকের প্রতি সম্পাদক-“একটি অনধিক ২০ শব্দের গল্প পাঠান।”

লেখক আর এতে আশ্চর্য হন না, জানেন এটাই দস্তুর।

লেখকের গল্প- “স্টেশনে এসে দেখি, প্ল্যাটফর্মে ট্রেন নেই, দূরে শুধু ক্ষীণ ইঞ্জিনের শব্দ। ট্রেনটা আসছে না যাচ্ছে কে বলে দেবে!”

সম্পাদক- “দাদা কী দিলেন, কী অদ্ভুত আপনার কলমের ধার! আহা, একটা বেশ জীবনদর্শন মানে সাহিত্য-দর্শন ফুটে উঠেছে; আসছে না যাচ্ছে, যাচ্ছে না আসছে? মানে আপনি লেখা দিচ্ছেন তাই আমি ছাপছি না আমি ছাপছি বলে আপনি লিখছেন তা কে বলে দেবে? আর শেষে ওই বিস্ময়বোধক চিহ্ন! উফ! কেন ফালতু ছাপতে যাব বড়গল্প মানে ছোটগল্প? আপনাকে একটা পুরস্কার দেওয়া উচিত। পুরস্কারের নাম হবে গিয়ে, হ্যাঁ কী নাম হওয়া উচিত বলুন তো?”

লেখক- “‘হতশ্রী’ রাখুন বরং, গল্পের সঙ্গে বেশ মানিয়ে যাবে। এখন তো শ্রী’রই যুগ কিনা। তা এখানেই থামবেন না কি পরবর্তী সময়ে গল্পের শব্দ সংখ্যা আরও কমবে?”

সম্পাদক- “কমবে বই কী, আমাদের লক্ষ্য সাহিত্যিকে সবার আঙিনায় পৌঁছে দেওয়া, তাই ভাবছি শব্দ সংখ্যাকে সিঙ্গল ডিজিটে নামিয়ে আনতে হবে, প্রথমে ন’টি শব্দের গল্প দিয়ে শুরু করে তারপরে ধীরে ধীরে…।”

লেখক-“থামুন মশাই, ভয় করছে, শূন্যতে নামার আগে দয়া করে থামুন।”

সম্পাদক আপাতত থেমেছেন বটে, তবে ওঁর যা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ মনোভাব, তাতে শূন্যে না নেমে থামবেন বলে মনে হয় না।

তার আগে যাই এই গল্পটাই চালিয়ে দিই কোথাও। দেখি কেউ যদি ছাপে।

বৈশাখী ২০২৪