সময়টা ১৯৬৯ সাল। চব্বিশ বছরের আমেরিক্যান তরুনী মারগারেট রোসিটার, বিজ্ঞানের ইতিহাস নিয়ে পড়াশুনো করছেন আমেরিকার ইয়েল ইউনিভার্সিটিতে। বিভাগীয় সাপ্তাহিক আড্ডায় আলোচনা চলছিল, অধ্যাপক, ও পুরুষ সহপাঠীদের সঙ্গে। সেখানে রোসিটার প্রশ্ন ছুঁড়েছিলেন, বিজ্ঞানের চর্চায় মেয়েরা কি আদৌ এগিয়ে এসেছে? বেশির ভাগই বলল, কিস্যু না, কখনোই না। একজন পাল্টা তর্ক জুড়ল, কেন? মাদাম কুরি? দু দুবার নোবেল প্রাইজ পেয়েছেন তো। অধ্যাপকেরা ফুট কাটলেন, ধ্যুস! উনি তো শুধু স্বামীর কাজে সাহায্য করেছেন, আসল প্রতিভা ছিল ওঁর স্বামীর। সেদিনের চব্বিশের তরুণীটি এখন অ্যামেরিকার করনেল ইউনিভার্সিটির এমেরিটাস প্রফেসর। বিজ্ঞানের ইতিহাস নিয়ে গবেষণায় অন্যতম বিশিষ্ট ও নামী ব্যক্তিত্ব। বলা ভাল, বিজ্ঞানের সাধনায় মেয়েদের ভূমিকা নিয়ে প্রথাগত অকরুণ তাচ্ছিল্যের প্রচলিত ধারণার খন্ডন করার লক্ষ্যে নিরলস অনুসন্ধান তাঁর জীবন-ব্রত। আর এ কাজ করতে গিয়ে তাঁর মনে হয়েছে, তিনি যেন এক আধুনিক অ্যালিস যে নাকি খরগোশের গর্তে চোখ রেখে বিস্ময়- জগতের কত অজানা তথ্যের নাগাল পেয়ে গেছে। ঘটনার স্রোতে একটু চোখ রাখা যাক। মেয়েদের পক্ষে বিজ্ঞানের সাধনা যথার্থ–ই কঠিন, সংসার, সমাজ বারে বারেই চোখ রাঙিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। মাদাম কুরির প্রথম বার নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর উদ্বোধনী ভাষণে রয়াল সুইডিস আকাডেমির প্রেসিডেন্ট বলেছিলেন, “ঈশ্বরের অভিপ্রায় ছিল না, একটি পুরুষ একা কাজ করুক, তিনি বরং চেয়েছেন, তার কাজের জন্য একটি সাহায্যের ব্যবস্থা থাকবে।” এমন সাহায্যকারিণীর ভূমিকার কথা শুনে মাদাম কুরি কি ভেবেছিলেন জানা যায় না। এ ঘটনার আট বছর পরে, দ্বিতীয়বার নোবেল পুরস্কার নেওয়ার সময় তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের বিতর্কিত অধ্যায় নিয়ে প্যারি শহরের ঘোরতর অশান্তির ঢেউ নোবেল কমিটির কাছেও পৌছেছিল। বন্ধু বিজ্ঞানীদের কেউ কেউ তাঁকে প্রাইজ নিতে আসতে বারণ করলে তিনি দৃপ্ত ভাষায় জানিয়েছিলেন, আমার কাজের জন্য এই পুরস্কার, আমার ব্যক্তি জীবনের যাপন-কথার সঙ্গে তার কোন সম্পর্ক নেই। মঞ্চে দাঁড়িয়ে মৃত স্বামী পিয়ের এর উদ্দেশে শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রত্যয়ী গলায় বলেছিলেন, আমার এবারের কাজ সম্পূর্ণ ভাবে আমার নিজের পরিশ্রমে করা। মাদাম কুরির মত প্রত্যয়ী, স্পষ্ট ভাষায় যে সব নারী বিজ্ঞানী তাঁদের সাধনার স্বপক্ষে মুখর হতে পারেন নি, তাঁদের দাম দিতে হয়েছে বারে বারে। মেয়েদের বিজ্ঞানের সাধনার ইতিহাসটা-ই এমন অভিশপ্ত। প্রেক্ষাপটে জমা রইল নারীর নিরলস শ্রমময়, দীর্ঘকালীন সাধনা, আর মুখে আলো পড়ল এক পুরুষ গবেষকের। কোথাও তিনি মেয়েটির স্বামী, কোথাও শিক্ষক, কোথাও গবেষণাগারের সহকর্মী বন্ধু। ইতিহাসের পথে এই ঘটনা ক্রমান্বয়ে ঘটে চলেছে। ১৯৯৩ সালে, রোসিটার এ ধরণের ঘটনাটিকে চিহ্নিত করলেন এক বিশেষ নামে, “ম্যাটিল্ডা এফেক্ট”। এর পেছনে রয়েছে আরেক সাহসিনী নারীর অবদান। উনিশ শতকে, আমেরিকার সক্রিয় নারীবাদী মহিলা- কর্মী ম্যাটিলডা জোস্লিন গেইজ চেয়েছিলেন চিকিৎসক হতে। প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় সেটি সম্ভব হয়নি। নিরুপায় গেইজ তাঁর অফুরান সাহস ও শক্তির বিনিময়ে হয়ে উঠেছিলেন আমেরিকার প্রথম মহিলা যিনি নারীর প্রতিভার স্বীকৃতি, তার অধিকার, বিশেষত ভোটাধিকা্রের দাবিতে সোচ্চার হয়েছিলেন। “ম্যাটিল্ডা এফেক্টের” বলি হয়েছেন যুগে যুগে অজস্র নারী বিজ্ঞানী। মনে পড়ছে বারো-শতকের ইটালির নারী চিকিৎসক ও শিক্ষক ট্রটা ডি রুগিয়েরো-র কথা। মেয়েদের শরীর ও স্বাস্থ্য নিয়ে তিনি লেখেন এক বিস্তৃত আলোচনা সমৃদ্ধ বই “ট্রটুলা”। কিন্তু প্রায় ষোল-শতক অবধি মানুষ বিশ্বাস করেছেন, এটি কোন নারীর লেখা হতেই পারে না, নিশ্চয় কোন এক পুরুষের রচনা। উনিশ শতকে, প্রতিকার-হীন কুষ্ঠ রোগের ভয়াবহতায় মানুষ ভয়ংকর বিপন্ন বোধ করেছে। অ্যামেরিকা থেকে তরুণী অ্যালিস অগাস্টা বল (Alice Augusta Ball) আফ্রিকার হাওয়াই ইউনিভারসিটিতে পড়তে এসেছিলেন। কেমিস্ট্রি ও ফার্মেসির জ্ঞানকে হাতিয়ার করে হাওয়াই অঞ্চলের বস্তি এলাকায় কুষ্ঠ আক্রান্ত মানুষের নিরাময়ের ব্যবস্থা তিনি করেছিলেন। চাল্মুগরা গাছের বীজ থেকে পাওয়া ভারি তেল এর ভেতর থাকা একটি বিশেষ উপাদান রোগীর শরীরে ইঞ্জেক্সানের মাধ্যমে প্রবেশ করিয়ে ভাল ফল পেয়েছিলেন। এ নিয়ে গবেষণাপত্র লেখা হল, কিন্তু প্রকাশের আগেই মাত্র চব্বিশ বছর বয়সে তিনি মারা গেলেন। তাঁর নাম অনুযায়ী এই নিরাময় পদ্ধতির নাম “বল মেথড” না হয়ে পরিচিত হল “ডিন মেথড” নামে, তাঁর গবেষণার অন্যতম জীবিত সঙ্গী ড. আরথার ডিনের নামে। ড. ডিন কৃতজ্ঞতা জানিয়ে একবারও অ্যালিস বলের নাম করলেন না। প্রায় নব্বই বছরের কাছাকাছি সময়ে এসে হাওয়াই ইউনিভার্সিটি সেই হতভাগ্য নারীটির কাজের স্বীকৃতি দিলেন। গত শতকের পদার্থবিজ্ঞানী লিসে মেইটনারের সঙ্গে হয়েছিল আরো গভীর তঞ্চকতা। আইনস্টাইন আদর করে তাঁর নাম দিয়েছিলেন জার্মান মাদাম কুরি। অস্ট্রিয়ায় জন্ম নেওয়া এই নারী ১৯১৭ সালে আবিষ্কার করেছিলেন তেজস্ক্রিয় মৌল আক্টিনিয়াম। আরো পরে ১৯৩৮-৩৯ সালে পরমাণুর বিভাজন ঘটিয়ে শক্তির উৎপাদনের কথা বিজ্ঞান-জগতে তিনি-ই প্রথম জানিয়েছিলেন। পদ্ধতির নাম দিয়েছিলেন নিউক্লিয়ার ফিসন, যার ওপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছিল পারমাণবিক বোমা বানানোর কৃট কৌশল। ফিজিক্স ও কেমিস্ট্রি মিলিয়ে প্রায় ৪৮ বার তাঁর নাম প্রস্তাবিত হয় নোবেল পুরস্কার প্রাপক হিসেবে। পাওয়া হয়নি। বরং ১৯৪৪ সালে নিউক্লিয়ার ফিশন আবিস্কারের জন্য নোবেল প্রাইজ জূটে গেল তাঁর কাজের অন্যতম সহযোগী অটো হানের। আশ্চর্যের কথা,এই অপ্রাপ্তিতেও মেইটনার সানন্দে বলেছেন, কে প্রাইজ পেল, সেটা বড় কথা নয়, আমাদের কাজের স্বীকৃতি এল, এটাই বড় কথা। আরেক যন্ত্রণার অভিজ্ঞতা বহন করেছিলেন এস্থার লিডারবারগ। স্বামী জসুয়া লিডারবারগেরর সঙ্গে একযোগে তাঁর বিস্ময়কর কাজের সূত্র ধরে ব্যাক্টেরিয়াদের জগতে মিলন, তাদের জেনেটিক বস্তুর বিনিময় পদ্ধতি আবিস্কৃত হল। অথচ ১৯৫৮ সালে ফিজিওলজি ও মেডিসিনে নোবেল প্রাইজ পেলেন জসুয়া লিডারবারগ, এস্থার রয়ে গেলেন সাধনার স্বীকৃতিতে উপেক্ষিতা। আজ যারা মলিকিউলার বায়োলজি নিয়ে কাজ করেন, তাঁরা সবাই জানেন, ব্যাক্টেরিয়া বিনষ্টকারী ভাইরাস ল্যামডা ফাজের নাম আর একে চিনিয়েছিলেন, বলা ভাল আবিষ্কার করেছিলেন স্বয়ং এস্থার লিডারবারগ। ১৯৬৬ সালে এই ভাইরাস নিয়ে একটি বই লেখা হল, “Phage and the Origins of Molecular Biology“, সেই বইতে এস্থারকে একটি চ্যাপ্টারও লিখতে দেওয়া হল না. এস্থার লিডারবারগের সমসাময়িক আরেক হতভাগ্য নারীবিজ্ঞানী রোজালিন্ড ফ্রাঙ্কলিন। ১৯৬২ সালে জীবের কোষের ভেতরে ডি এন এ অণুর গঠন ও কাজ নিয়ে ফিজিওলজি ও মেডিসিনে যে তিন জন মানুষ নোবেল প্রাইজ পেয়েছিলেন, সে তালিকায় তিনি ছিলেন না, থাকা সম্ভবও ছিল না, চার বছর আগেই তাঁর মৃত্যু ঘটেছে, মাত্র সাঁইত্রিশ বছর বয়সে। তাঁর মৌলিক কাজের ওপর ভিত্তি করে, ডি এন এ অণুর গঠন সম্পর্কে সঠিক সিদ্ধান্ত করা গিয়েছিল। সহযোগী নোবেলজয়ী বিজ্ঞানীরা নোবেল বক্তৃতায় তাঁকে প্রযুক্তি- সহায়কের অতিরিক্ত মর্যাদা দেননি। দূর আকাশে টেলিস্কোপের সাহায্যে অজস্র গ্রহ তারকার অনুসন্ধান করতে মেতেছিলেন আরেক তরুণী বিজ্ঞানী, জোসিলিন বেল বারনেল। আর ঘটনাক্রমে ১৯৬৭ সালে সন্ধান পেয়েছিলেন এক বিশেষ ধরণের নক্ষত্র বা পালসারের। তিনি প্রথম দেখলেন আকাশের এক নির্দিষ্ট অঞ্চল থেকে নিয়মিত বিরতিতে বেতার সংকেত পাওয়া যাচ্ছিল। এটি-ই ছিল প্রকৃত পক্ষে পালসার বা স্পন্দিত নক্ষত্র। আসলে এরা এক ধরণের মৃত নক্ষত্র, যার থেকে বিকিরণ হয় প্রচুর তড়িত চুম্বকীয়-তরঙ্গের। এই বিস্ময়কর আবিষ্কারের কথা প্রকাশিত হল ১৯৬৮ সালে নেচার পত্রিকায়। ১৯৭৪ সালে, সেই প্রথম জ্যোতির্বিদ্যার কাজ নিয়ে গবেষণার স্বীকৃতি দিলেন নোবেল কমিটি। কিন্তু পুরস্কার পেলেন তাঁর পি এইচ ডির মেন্টর – অ্যান্টনি হিউইস। ঘটনার পঁয়ত্রিশ বছর পরে ২০০৯ সালে বিনয় সহকারে ব্যাখা দিয়েছিলেন, “সে-সময় রিসার্চ স্টুডেন্টদের নোবেল প্রাইজ দেওয়ার প্রথা ছিল না।” কিন্তু সত্যি কি তাই? তাহলে মাদাম কুরি কী করে পেয়েছিলেন? আরও পরে ২০১৩ সালে ন্যাশানল জিওগ্রাফিককে দেওয়া সাক্ষাতকারে যে কথা জোসিলিন বলেছিলেন, হয়ত সেটাই তাঁর সারাজীবনের অভিজ্ঞতা প্রসূত বাণী, “সেযুগে বিজ্ঞানের গবেষণার ছবিটাই ছিল ওই রকম, একজন বয়সে বড় পুরুষের অধীনে থাকত বেশ কিছু অধস্তন ও অনুজ সহকর্মী, যাদের নিজস্ব চিন্তন ক্ষমতা থাকতে পারে বলে ভাবা হোত না, তারা শুধু নির্দেশ পালন করত।” ভারতীয় নারী-বিজ্ঞানী বিভা চৌধুরি ছিলেন পদার্থবিদ্যার গবেষণার জগতে আরেক উজ্জ্বল নক্ষত্র। গতশতকের মধ্যভাগে ভারতে বসে মহাজাগতিক রশ্মি নিয়ে উচ্চমানের গবেষণা করেছেন, বিখ্যাত নেচার পত্রিকায় সেই গবেষণা প্রকাশ করেছেন। পরে ইউ -কে তে গিয়ে বিশিষ্ট নোবেল লরিয়েট পি এম এস ব্ল্যাকেটের সঙ্গে গবেষণা করেছেন। মহাজাগতিক রশ্মি নিয়ে গবেষণা করে আবিষ্কার করেন পায়ন এবং মিয়ন কণা। ভারতে বসে এই “কণা -পদার্থবিদ্যা” বা পারটিকল- ফিজিক্স নিয়ে আরো বিস্তৃত কাজ করতে পারেননি, পদ্ধতি জানা থাকলেও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পটভূমিতে ভারতের মাটিতে গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ সংগ্রহ করা যায়নি। অথচ সেই পদ্ধতি অবলম্বন করে বিদেশে নোবেল প্রাইজ পেলেন, সিসিল পাওয়েল। ভারতে ফিরে, সারাজীবন অবিবাহিত থেকে বিজ্ঞানের গবেষণায় আত্মনিয়োগ করে ছিলেন। উচ্চমানের গবেষণাপত্র প্রকাশ করেও কোথাও তেমন স্বীকৃতি পাননি, না কলকাতার বোস ইন্সটিটুটে, বা সাহা ইন্সটিটুট অফ নিউক্লিয়র ফিজিক্সে , না মুম্বাইয়ের টাটা ইন্সটিটুট অফ ফান্ডামেন্টাল রিসার্চে। ২০০৮ সালে ইন্ডিয়ান আকাডেমি অফ সায়েন্সেস দ্বারা প্রকাশিত ভারতীয় নারী-বিজ্ঞানীদের নিয়ে লেখা বিখ্যাত বই,”Lilavati’s Daughters”তে আটানব্বই জন বিখ্যাত বিজ্ঞানসাধিকার মধ্যেও তাঁর স্থান হয়নি। ভারতে তাঁর প্রতিভার স্বীকৃতি না জুটলেও প্যারিসের ইন্টারন্যাশানাল অ্যাস্ট্রনোমিক্যাল ইউনিয়ন তাঁর সম্মানে দূর মহাকাশে HD86081 নক্ষত্রটির নাম রেখেছে বিভা। এইসব উপেক্ষিত নারী সাধিকাদের কথা আজো তেমন করে মানুষ জানেনা। তাই সবাই আলগা মন্তব্য ছুঁড়ে দিতে পারলেই তৃপ্ত থাকেন। মেয়েরা কি আর ঘরে বাইরে সমান ভাবে তাল রাখতে পারেন? কিন্তু যে বা যাঁরা সেটি সফল ভাবে করেছেন, তাদের স্বীকৃতি-হীনতা সমাজের কাছে নিশ্চিত ভাবে অগৌরবের। তাঁরা প্রচারের আলোর বাইরে থেকে গেছেন, স্বামীর সহযোগী হয়ে, পরামর্শ- দাতা হয়ে অথবা শিক্ষকের গবেষণায় ছাত্রী হয়ে। মনে পড়ছে বিশিষ্ট পদার্থবিদ মিলেভা ম্যারিক এর কথা। অসফল দাম্পত্য আর স্বামী আইনস্টাইনের প্রবল খ্যাতিতে হারিয়ে গেছে তাঁর অবদান। এই সব মেধাবিনীদের জন্য রাশি রাশি উপেক্ষার কথা আগেই অনুভব করে সম্ভবত কেরিয়র গড়ে তোলার প্রথম যুগে মাদাম কুরি স্বামীর নাম ছাড়া নিজের নামে গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। সত্যি তো, এ ধরণের পরিকল্পিত পুরুষতান্ত্রিক ব্যবস্থায় না্রী-মেধার মুল্য দেওয়ার অবকাশ কি তিলমাত্র ছিল? থাকলেও খুব কম মানুষই সেই মূল্য দিয়েছেন। এখনো সেই ট্র্যাডিশান বহমান। সবার তো আর পিয়ের কুরি হওয়ার মত মানসিক যোগ্যতা ছিল না ! কাচের দেয়াল ভেঙ্গে যে সব মেধাবিনীরা নিজেদের প্রতিষ্ঠা করেছেন সমাজে, বিজ্ঞানের জগতে তাঁদের কথা আর বেশি করে এই একুশ শতকের মানুষের চোখে পড়া খুব প্রয়োজন। কারুর করুণা বা দয়ায় নয়, নিজের সক্ষমতায় যে সব নারী বিজ্ঞানী পৃথিবীতে মহৎ কাজের চিহ্ণ রেখে গেছেন, সে চিহ্ণ যেন উপেক্ষার চোরা স্রোতে হারিয়ে না যায়। সেই অনবধানতা বা অন্যায় হয়তো ভাবীকালের সুভদ্র, উদার সমাজ ক্ষমা করবে না।
1 Response
অসাধারণ লেখা। খুব ভালো লাগলো।