"বাবু ওই রাস্তা দিয়ে না যাওয়াই ভাল ওখানে তো..." "ওই দিকে আবার কী আছে?" গেস্ট হাউসের কেয়ারটেকার হরেনকাকার কথা শুনে প্রশ্ন করে ওঠে অয়ন। "ওই দিকে মানে ... তেনাদের বাস!" হরেনকাকা ঢোক গিলে বলে। ‘ধুর! তেনাদের আর কোন কাজ নেই ? আমার জন্য বসে থাকবে যেন!’ মনে মনে ভেবে আর কথা না বাড়িয়ে গাড়িতে স্টার্ট দেয় অয়ন। হোটেল ব্যবসায়ী পঙ্কজ রায়ের একমাত্র ছেলে অয়ন। গেস্টহাউসটার ব্যবসায় কয়েক বছর ধরে বেশ মন্দা। তাই নতুনভাবে কিছু করার পরিকল্পনা করে এখানে এসেছে অয়ন। সামনে মাসের শুরুতে আবার আসতে হবে । গাড়িটাকে ডান দিকে ঘুরতেই বড় রাস্তায় উঠে পড়ে অয়ন। জ্যোৎস্নায় গাড়ি চালাতে কোন অসুবিধা হচ্ছে না। রাস্তা পুরো ফাঁকা। শহরতলির দিকে রাত দশটা মধ্যরাতের সমান। কিছুটা পথ যাওয়ার পর অয়ন হঠাৎ দেখতে পেল গাড়ির ঠিক সামনে সাদা শাড়ি পরা এক মহিলা দাঁড়িয়ে। ‘একি! ইনি আবার কোথা থেকে উদয় হলেন? তার মানে হরেন কাকার কথাটা সত্যি...!’ গাড়ির সাইড উইন্ডোতে সেই মহিলা নক করতে থাকে। "এক্সকিউজ মি! একটু লিফট পেতে পারি প্লিজ। আসলে উল্টো পায়ের জন্য রাস্তায় হাঁটাচলা করতে খুব মুশকিল হয়। যত না সামনের দিকে এগোই তার দ্বিগুণহারে পিছিয়ে যেতে হয়। আপনার কাছ থেকে লিফট পেলে আরাম করে বসে নেক্সট কবরস্থান-এ সময় মতো পৌঁছে যেতে পারি। আজকে ওখানে আমার ভূতেন্দ্র নৃত্য আছে। ভূতের রাজার জন্মদিন উপলক্ষ্যে আমাকে আজ নৃত্য পরিবেশনা করতে হবে। আপনি দেরি করবেন না প্লিজ!" অয়নের তখন অজ্ঞান হওয়ার জোগাড়। নিজের চোখের সামনে সে দেখে সেই সাদা শাড়ি পরা মহিলা মানে পেত্নীর পা-দুটো উল্টো দিকে ঘোরানো। “না!” চিৎকার করে ওঠে অয়ন। "আরে ধ্যাৎ! পরে ভয় পাবেন আগে ওখানে আমাকে পৌঁছে দিন! আমার নাচ দিয়েই অনুষ্ঠান শুরু হবে।” “না!” ভোরের আলো চোখের ওপর। ধড়ফড় করে উঠে পড়ে অয়ন। চোখ খুলে নিজেকে আবিষ্কার করে একটি কবরস্থানের কাছে। কানের কাছে কে যেন বারবার “থ্যাংক ইউ! থ্যাংক ইউ!” বলেই চলেছে।